বৈশ্বিক খাদ্য সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত গরিব আরব ও মুসলিম দেশগুলো
ইউক্রেন যুদ্ধ ও সম্প্রতি কৃষ্ণ সাগরীয় শস্য চুক্তি ভেঙ্গে পড়া এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এতে গরিব আরব ও মুসলিম দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেছেন।
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, বিশেষকরে যেসব দেশের অর্থনৈতিক সংকট চলছে এবং মুদ্রার দাম কমে গেছে সেসব দেশে পুষ্টিহীনতা বাড়ছে এবং শিশুদের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করছে।
শুক্রবার বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি চলতি গ্রীষ্মে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে রেকর্ড উচ্চ তাপমাত্রা বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তার ওপর চাপ বৃদ্ধি করেছে। বিশেষ করে গরীব আরব, আফ্রিকান ও মুসলিম দেশগুলোর ওপর ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে।
জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ সাগরীয় শস্য চুক্তি হয়েছিল। এরফলে ইউক্রেনের শস্য ও সার রপ্তানি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। সম্প্রতি রাশিয়া এক তরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গেলে খাদ্যসংকট বৃদ্ধি পায়। দ্রুত বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে যায়। মারাত্মক খরার কারণে এশিয়া ও আফ্রিকায় খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। মিসর, জর্দান, তিউনিসিয়া ও লেবাননের মতো দেশগুলো অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে অনেক দেশ। তাদের মুদ্রার দামও কমে গেছে।
শুক্রবার ওয়াশিংটনে প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্লোবাল ক্রপ ডাইভারসিটি ট্রাস্ট এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিশ্বের প্রখ্যাত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ কেরি ফলার বলেন, বিশ্বের ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, চলতি গ্রীষ্ম হল সবচেয়ে উষ্ণ গ্রীষ্মকাল। এশিয়ার দেশগুলোর ধান উৎপাদন এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের ১৯৬টি দেশের মধ্যে ১৩৬টিকে খাদ্য আমদানি করতে হয়। ইউক্রেনের সবচেয়ে বেশি শস্য আমদানিক কারক ১৫ দেশের সবকটি উন্নয়নশীল দেশ। এসব দেশে শিশুরা উচ্চ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। গরিব আরব ও মুসলিম দেশগুলোতে এ পুষ্টিহীনতার হার আশংকাজনক। মিসরে এ হার ২২ শতাংশ, বাংলাদেশে ২৮ শতাংশ, লিবিয়িায় ৩৮ শতাংশ, ভারতে ৩১ শতাংশ, কেনিয়ায় ১৮ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৩১ শতাংশ।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অবরোধ সমন্বয় বিভাগের প্রধান রাষ্ট্রদূত জেমস ও ব্রিয়েন বলেছেন, ২০২২ সালে ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার হামলার পূর্বে ইউক্রেন বিশ্বের মোট চাহিদার ১০ শতাংশ সরবরাহ করতো। তিনি বৈশ্বিক খাদ্য সংকট হ্রাসে কৃষ্ণসাগরীয় শস্য উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এটি বৈশ্বিক দক্ষিণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ। ২০২২ সালে ইউক্রেন ৫ কোটি ৫০ লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানি করে যার মধ্যে ৩ কোটি ২০ লাখ শস্য চুক্তির আওতায় করা হয়।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি


