নাগরনো-কারাবাখে আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত, অস্ত্র সমর্পণে সম্মত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা
নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলে স্বার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা দিয়েছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। মাত্র ২৪ ঘণ্টার সামরিক অভিযানে দেশটির বিচ্ছিন্ন অঞ্চলটির ওপর দেশটির স্বার্বভৌম নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হলো।
বিচ্ছিন্নতাবাদী আর্মেনীয় সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সামরিক অভিযান শুরু করে আজারবাইজান। অভিযানের মুখে আর্মেনীয় বাহিনী আত্মসমর্পণে সম্মত হয়। এরপর যুদ্ধবন্ধ করে আজারবাইজান। প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ এ অভিযান পরিচালনাকারী আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীর বীরত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। যুদ্ধ বিরতি অর্জনে সেখানে মোতায়েন রাশিয়ার শান্তিরক্ষী বাহিনী ভূমিকা পালন করে।
দক্ষিণ ককেশাসের আজারবাইজানের ছিটমহল নাগরনো-কারাবাখে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার আর্মেনীয় বাস করে। অভিযান শুরু করে আজারবাইজান আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীকে সাদা পতাকা উত্তোলন এবং সেখানে তাদের গড়ে তোলা ‘অবৈধ সরকার’ বিলুপ্ত করার দাবি জানায়। অভিযানের সময় প্রতিবেশী আর্মেনিয়া বা অন্য কারোর কোনো সহায়তা না পাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়েছে আর্মেনীয় বিদ্রোহীরা। আজারবাইজান ও আর্মেনীয় বিদ্রোহী উভয় পক্ষই চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যা বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে কার্যকর হয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নাগোরনো-কারাবাখে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীকে নিরস্ত্র এবং ভেঙে দেওয়া হবে।
আজারবাইজানের অভিযানে ৭ বেসামরিক লোকসহ ৩২ নিহত ও ২০০ জন আহত হয়েছে। সামরিক অভিযানের সময় আজারি সেনাদের হতাহতের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি আজারবাইজান। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বুধবার সন্ধ্যায় বলেছেন, কয়েকজন সেনা হতাহত হয়েছে। অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আর্মেনীয় সূত্র দাবি করেছে, এ অভিযানে কমপক্ষে ২০০ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ৪০০ জনের বেশি।
আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ছিটমহল নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে কয়েক মাস ধরে মাঝে উত্তেজনা চলছিল। সম্প্রতি স্থল মাইন বিস্ফোরণ ও অন্য এক ঘটনায় আজারবাইজানের ১১ পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর নিজ ভূখণ্ডে বিদ্রোহ দমন ও স্বার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এ অভিযান চালায় দেশটি। ১৯৯৪ সালের এক যুদ্ধের পর থেকে আর্মেনীয়ার সমর্থনে জাতিগত আর্মেনীয় বিদ্রোহীরা ছিটমহলটি দখল করে রেখেছিল। ২০২০ সালের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে আজারবাইজান এর বড় অংশ দখল মুক্ত করে। আর সর্বশেষ এ চুক্তির মধ্য দিয়ে কয়েক দশকের বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণের অবসান ঘটল।
এদিকে নাগরনো-কারাবাখের ঘটনায় আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভেনে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা দেশটির প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছে।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি


