বিনা কারণে হামাসের হামলা হয়নি: জাতিসংঘ মহাসচিব

 জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলনরত সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে যে হামলা চালিয়েছিল, তা ‘শূন্য থেকে’ হয়নি। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে এ মন্তব্য করেন তিনি। এ মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ইসরায়েল তার পদত্যাগ দাবি করেছে। 

জাতিসংঘ মহাসচির বলেন, ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারিত্বের শিকার হয়েছের ফিলিস্তিনিরা। তারা তাদের মাতৃভূমিকে ইহুদী বসতিতে পরিণত হতে এবং সহিংসতায় জর্জরিত হতে দেখেছে। থমকে দেওয়া হয়েছে তাদের অর্থনীতিকে এই মানুষগুলোকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে এবং ধ্বংস করা হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি। তাদের দুর্দশার রাজনৈতিক সমাধানের আশা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।’

৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। উপত্যকাটি অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৯ দিন ধরে অবিরাম ক্রমবর্ধমান নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে অবরুদ্ধ উপত্যাকাটিতে। গাজায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছে ৭ শতাধিক মানুষ। অপরদিকে, ওই দিনেই হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয় ১ হাজার ৪০০ জন। হামাসের হাতে বন্দি হয়েছে ২ শতাধিক ইসরায়েলি। 

নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে জাতিসংঘের মহাসচিব আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার হামলা চালানোর পক্ষে হামাসের ওই হামলাকে সাফাই হিসেবে ব্যবহার করার কোনো যুক্তি নেই। আর ওই ভয়ংকর হামলার কারণে ফিলিস্তিনি মানুষদের সম্মিলিতভাবে যে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, তাও ন্যায্যতা পেতে পারে না।’  

ইসরায়েলের নাম উল্লেখ না করে গুতেরেস বলেন, ‘বেসামরিক লোকজনকে রক্ষা করার অর্থ তাদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা নয়। সুরক্ষা দেওয়ার অর্থ এই নয় যে, ১০ লাখ মানুষকে দক্ষিণে চলে যেতে বলা, যেখানে কোনো আশ্রয়, খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি নেই। আর মানুষকে দক্ষিণে যেতে বলে সেখানে বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

গুতেরেস বলেন, ‘গাজায় মানবিক আইনের যে সুস্পষ্ট লঙ্ঘন আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা নিয়ে আমি গভীর উদ্বিগ্ন। আমি স্পষ্টভাবে বলছি, একটি সংঘাতে কোনো পক্ষই আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’  

 গাজায় ত্রাণ সরবরাহের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। তবে গুতেরেস বলেছেন, যে পরিমাণ  ত্রাণ এখন গাজায় ঢুকছে সেগুলো বিশাল সমুদ্রের পানির একটি ছোট ফোটার সমান।

এদিকে গুতেরেসের এসব মন্তব্যের ক্ষুব্ধ হয়েছে ইহুদী রাষ্ট্রটি। এমনকি জাতিসংঘ মহাসচিবের পদত্যাগ দাবি করেছেন জাতিসংঘের ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলার্ড এরডান। 

গুতেরেস এমন মন্তব্য করার পর তার সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকে বসবেন না বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন। তিনি এক্সে আরও লিখেছেন, ‘৭ অক্টোবরের গণহত্যার পর সমানুপাতিকের কোনো স্থান নেই। হামাসকে অবশ্যই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করা হবে।’সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news