ধুলাবালি, আতংক ও তীব্র ক্ষুধার যন্ত্রণায় গাজার বাস্তুচ্যুত মানুষেরা

 ইউসুল মেহনা প্রথমে ভেবেছিলেন শিগগিরই যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে। এরপর তার বাড়ি ইসরায়েলি হামলায় ধুলিস্যাত হয়ে যায় এবং তিনি আহত হন। এরপরের ২৫দিন তিনি একেবারে নি:স্ব অবস্থায় কোনরকমে বেঁচে আছেন।

একই অবস্থা গাজার উত্তরাঞ্চলের লাখ লাখ ফিলিস্তিনির। অবশেষে মেহনা উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। ইসরায়েলি সেনাদের হামলার হাত থেকে বাঁচতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি কখনো ট্রাকে চড়ে, কখনো বা টানা গাড়ি ও গাধা চালিত গাড়িতে করে, আবার কখনো পায়ে হেটে তারা সেখানে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। গাজা হল ইসরায়েল মিসর ও ভূমধ্যসাগরের মাঝে ছোট একটি উপত্যাকা।

খান ইউনুসের বনি সুহেইলা মোড়। এখানে এসে মিশেছে বিশাল সালাহ আল-দীন সড়ক। গাজার এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত চলে গেছে সড়কটি। গাজা সিটি থেকে যেসব লোকজন পালিয়ে যাচ্ছেন তারা খান ইউনুস পার হয়ে আরও দক্ষিণে রাফাহ শহরে পৌঁছার আশায় সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাদের পালিয়ে যাওয়ার এ মিছিল এখনও বাড়ছে। রাফাহ ক্রসিংয়ের পরে রয়েছে প্রতিবেশি দেশ মিসর।

মেহনা ভোর সাতটায় গাজা সিটির উত্তরের জাবালিয়া উদ্ব্স্তাু শিবির ত্যাগ করেন। তিনিও রাফাহ শহরে পৌঁছার আশা করছেন। কিন্তু খান ইউনুসে এসেই তার এ যাত্রা শেষ হয়। আট ঘন্টায় তিনি কেবল ২৫ কিলোমিটার পথ আতিক্রম করতে সমর্থ হন তিনি।

বিমর্ষ কন্ঠে মেহনা বলেন, এ পথটুকু পাড়ি দিতে আমাকে ৫০০ শেকেল (১৩০ ডলার) ব্যয় করতে হয়েছে। রাফাহ পর্যন্তু যাওয়ার মতো কোন অর্থ আর তার হাতে নেই। এমনকি সাথে একটুকরা রুটিও নেই। এ সময় তাকে ঘিরে ছিল তার ৬ সন্তান। মেহনার স্ত্রী অসুস্থ। তিনি হাটতে পারেন না। হুইলচেয়ারে বসিয়ে তাকে আনা হয়েছে ভাড়া করা ট্রাক ও গাধার গাড়িতে করে।

শিশুরা ধুলামলিন মেঝেতে ঘুমাচ্ছে আর তাদের বাবা-মা কিভাবে তারা এ পরিস্থিতিতে বেচে থাকবেন তা নিয়ে নিদারুণ দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ১৫ লাখই বাস্তচ্যূত হয়েছেন। জাতিসংঘের হিসেবে গাজার প্রতি দুইটি বাড়ি একটি ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি হামলার আগে গাজার ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ দারিদ্রর মধ্যে জীবন যাপন করতেন। আর দুই তৃতীয়াংশ মানুষ আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news