গোরস্থানে পরিণত হচ্ছে গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল: ডব্লিউএইচও

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গাজার আশ-শিফা হাসপাতালের ভয়াবহ বিপর্যয়কর পরিস্থিতি নিয়ে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। ডব্লিউএইচও জানায়, হাসপাতালটির ভেতর ও বাইরে এখন লাশের স্তুপ পড়ে আছে। হাসপাতালটি এখন ‘প্রায় গোরস্থানে’ পরিণত হয়েছে।

তিসংঘের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিদ্যুতের অভাবে হাসপাতালের অসংখ্য অপূর্ণাঙ্গ নবজাতক ও ৪৫ জন কিডনি রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মারাত্মক জ্বালানি সংকটে থাকা গাজা সিটির এ হাসপাতালটির একেবারে কাছেই কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড যুদ্ধ চলছে। বিদ্যুতের অভাবে এখানে চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে।

ইসরায়েল অভিযোগ করেছে যে, হাসপাতালটির নীচে হামাসের কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার রয়েছে। হামাস অবশ্য বার বার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাস আকস্মিকভাবে ইসরায়েলে বড় ধরণের এক অভিযান চালায়। এতে ১২০০ ইসরায়েলি প্রাণ হারায় এবং জিম্মি হিসেবে আটক হয় আর দুই শতাধিক মানুষ।

সেইদিন থেকেই ইসরায়েল গাজায় পাল্টা ভয়াবহ নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। টানা ২০ দিন অবিরাম বিমান হামলার পর ২৭ অক্টোবর থেকে সেখানে যোগ হয়েছে স্থল হামলা। এতে গাজায় নিহত হয়েছেন ১১১৮০ জন ফিলিস্তিনি। যার মধ্যে ৭ হাজারেরও বেশি শিশু। ইসরায়েলের বর্বর হামলা থেকে গাজা উপত্যাকার হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জা, উদ্বাস্তু শিবির, বসতবাড়ি, স্কুল কিছুই রেহাই পাচ্ছে না।

গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আশ-শিফা হাসপাতালটি বেশ কয়েকদিন যাবত প্রচন্ড লড়াইয়ের রণাঙ্গনে রূপ নিয়েছে। ডব্লিউ এইচওর মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডামেইয়ের বলেছেন, হাসপাতালটিতে প্রায় ৬০০ রোগী এবং এর গলিপথে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন, হাসপাতাল জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য লাশ। যা রাখার মতো কোন লাশঘর নেই। এগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া বা দাফন করার কোন উপায় নেই। লিন্ডামেইয়ের বলেন, এ হাসপাতালটি যেমনভাবে চলার কথা সেভাবে আর চলছে না। এটি প্রায় গোরস্থানে রূপ নিয়েছে।

ডাক্তাররাও বলছেন যে হাসপাতালটিতে লাশের স্তুপ জমে গেছে। তাতে পচন ধরেছে। আশ-শিফা হাসপাতালের পরিচালক আবু সেলমিয়া বলেেেছন, পচা লাশগুলোকে দাফন করার কোনো অনুমতি এখনো তারা পাননি। এখন কুকুরেরা হাসপাতাল চত্তরে প্রবেশ করে লাশগুলো খাওয়া শুরু করেছে।

অপুষ্ট শিশুদের নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় তাদেরকে ইনকিউবেটরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। সেলমিয়া বলেন, অক্সিজেনের অভাবে এমন ৭টি শিশু মারা গেছে।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news