গাজার হাসপাতালে লাশের গন্ধ, গণকবর দেওয়া হলো ২০০ জনকে

গাজার অবরুদ্ধ আল-শিফা হাসপাতালে শিশুসহ ২০০ রোগীর লাশ গণকবর দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার হাসপাতালটির পরিচালক আমিরাত-ভিত্তিক দ্য ন্যাশনালকে এ কথা জানিয়েছেন। গত শনিবার জ্বালানি সরবরাহ শেষ হয়ে গেলে এই হাসপাতালে ৭ নবজাতকসহ ৩৪ জনের মৃত্যু হয়।

বুধবার হাসপাতালটির ওপর ইসরায়েলি সেনাদের হামলার শুরুর আগের দিন এ হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ জাকাউত বলেন, আশপাশে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী অবস্থান করায় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে গণকবর খনন শুরু করেন। তবে কবরটি খননের জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে উপযুক্ত কোনো সরঞ্জাম না থাকায় তারা অনেক কসরত করে কবর খনন করছেন।

দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় গাজা থেকে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে মিসরে চলে যেতে সক্ষম হয়েছেন হাসপাতালের ভাসকুলার সার্জন মোহাম্মদ জাকাউত। দ্য ন্যাশনালকে তিনি জানান, পচা লাশের দুর্গন্ধ এখন পুরো হাসপাতালজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

হাসপাতালের পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই হাসপাতালে রোগীদের কোনো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চিকিৎসক হয়েও কাউকে সাহায্য করা যাচ্ছে না। আমরা যা-ই করি না কেন, রোগীরা মারা যাচ্ছে। প্রচুর রক্তের প্রয়োজন হলেও কাউকে রক্ত দেওয়াও যাচ্ছে না। এমনকি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলেও কোনো ব্যবস্থা নেই। আমি বসে বসে আমার রোগীদের মৃত্যু দেখতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখনো যারা বেঁচে আছেন আল্লাহ তাদের সহায় হোন।’ এই চিকিৎসক আরও জানান, আল-শিফা হাসপাতালে ইনকিউবেটর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে ৭ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। আরও ৩৬ শিশুকে যেভাবে রাখা হয়েছে তা অস্বাভাবিক।

গাজার ৩৪টি হাসপাতালের মধ্যে প্রায় ২৫টিতে এখন আর কোনো পরিষেবা নেই। নেই কোনো অ্যাম্বুলেন্সও। কারণ অ্যাম্বুলেন্সগুলো ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, তাদের ১৮টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে এখন অবশিষ্ট আছে মাত্র ৫টি।

হাসপাতালটি কয়েকদিন যাবত ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতালটি ঘেরাও করে গুলি চালাচ্ছিল। অবরুদ্ধ থাকায় অনেকে সেখান থেকে হেঁটে পালানোর চেষ্টা করে অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ইসরায়েলি স্নাইপারদের গুলির ভয়ে হাসপাতালে অবস্থান করা মানুষেরা জানালার কাছেও যেতে পারছিলেন না।

বুধবার হাসপাতাল চত্তরে ট্যাংক নিয়ে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি সেনারা । ্সেখানে হামলার আগে হাসপাতালটিতে স্মোক বোমা হামলা চালায়।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news