কাজের চাপে অফিসেই ঘুমোতে দেখা গিয়েছিল টুইটারের কর্মীকে, চাকরি বেঁচে গেল তাঁর

 মালিকানা হাতে পাওয়ার পর থেকেই টুইটারে (twitter) একাধিক বদল এনেছেন ইলন মাস্ক। সেই সমস্ত পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে টুইটারের কর্মীদের উপর। ইতিমধ্যেই ছেঁটে ফেলা (layoff) হয়েছে সংস্থার ৫০% কর্মীকে, যা নিয়ে গত সপ্তাহখানেক ধরে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। ইতিমধ্যেই টুইটারের এক মহিলা কর্মীর ছবি ভাইরাল হয়েছিল নেটমাধ্যমে। সেই ছবিতে তাঁকে অফিসের মেঝেতে শুয়ে ঘুমোতে (sleeping on office floor) দেখা গিয়েছিল। সেই ছবি নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হলেও জানা গেছে, গণছাঁটাইয়ের আঁচ পড়েনি ওই কর্মীর উপর। অফিসে ঘুমোতে বাধ্য হলেও চাকরি যাওয়ার হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন তিনি।

এস্থার ক্রফোর্ড নামে ওই কর্মীর লিঙ্কডইন প্রোফাইল থেকে জানা যায়, তিনি গত দু’বছর ধরে টুইটারের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ডিরেক্টর পদে কর্মরত। গত সপ্তাহেই অফিসের মেঝেতে শুয়ে তাঁর ঘুমোনোর ছবি আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল ইন্টারনেটে। অনেকেই তাঁকে সমবেদনা জানালেও টুইটারের ‘ওয়ার্ক কালচার’কে তুলোধোনা করেছিলেন নেটিজেনদের একাংশ।

ছবিটি শেয়ার করেছিলেন টুইটার স্পেসেজের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ইভান জোন্স। সেই ছবিতে ইভানের ‘বস’ এস্থারকে একটি স্লিপিং ব্যাগের মধ্যে গুটিসুটি মেরে শুয়ে চোখে স্লিপিং মাস্ক লাগানো অবস্থায় ঘুমোতে দেখা গিয়েছিল। ইভান এ শেয়ার করে সেই ছবি রিটুইট করেছিলেন এস্থার নিজেও। ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ‘ডেডলাইন মিট করার জন্য যখন টিমকে সারাদিন ধরে কাজ করতে হয় তখন কখনও সখনও কর্মস্থলেই ঘুমানো ছাড়া উপায় থাকেনা।’

সংবাদ সংস্থা সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ইলন মাস্ক টুইটারে দায়িত্ব নেওয়ার পরে কাজের ডেডলাইন আরও এগিয়ে এনেছিলেন। যার ফলে অফিসের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ঢের বেশি সময় কাজ করতে হচ্ছে কর্মীদের। জানা গিয়েছিল, মাস্ক সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন, চাকরি বাঁচাতে চাইলে দিনে ১২ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে সাত দিন কাজ করতে হবে। ডেডলাইন মিট করার জন্য সেটাই করতে বাধ্য হচ্ছেন কর্মীরা। স্পষ্টতই, কেন এস্থারকে অফিসেই ঘুমোতে হয়েছিল, সেই প্রশ্নের জবাব পেয়ে গিয়েছেন নেটিজেনরা।  
এস্থারের ছবিটি নেট মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরেই টুইটারের ওয়ার্ক কালচার নিয়ে ফুঁসে উঠেছিলেন নেটিজেনরা। সংস্থার মুনাফা বাড়ানোর লক্ষ্যে চাকরি হারানোর ভয় দেখিয়ে কর্মীদের উপর যে অমানবিক চাপ দেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত তাঁরা। যদিও জানা গেছে, এই বিপুল পরিমাণ কর্মী ছাঁটাইয়ের মধ্যেও চাকরি বেঁচে গিয়েছে এস্থারের।

সমালোচকদের জবাব দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে টুইটারকেই বেছে নিয়েছেন এস্থার। নেটিজেনদের সমালোচনার জবাবে তিনি লেখেন, ‘যেহেতু অনেকেই বুঝতে পারছেন না, তাই আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি। কঠিন কাজ করতে গেলে অনেক সময় অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়, যেমন সময়, এনার্জি ইত্যাদি। সারা পৃথিবী জুড়ে আমার দলের লোক ছড়িয়ে রয়েছে যারা নতুন কিছু করে দেখানোর জন্য উদয়াস্ত খেটে চলেছে। তাই তাদের চাঙ্গা রাখতে আমার এটুকু করা জরুরি।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমি টুইটারে কিছু অসম্ভব প্রতিভাবান এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষের সঙ্গে কাজ করি, এবং এই মুহূর্তে আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। একটা বিশাল বড় সাংস্কৃতিক এবং ব্যবসায়িক পরিবর্তন হতে চলেছে যার জন্য আমাদের হাতে এক সপ্তাহেরও কম সময়ে রয়েছে। প্রোডাক্ট ডিজাইন, ইঞ্জিনিয়ারিং, আইন, ফিন্যান্স, মার্কেটিং ইত্যাদি সমস্ত বিভাগের কর্মীরা তাঁদের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।


খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news