মার্কিন জীবাণু অস্ত্র কর্মসূচির অব্যাহত বিস্তারে রাশিয়ার হুঁশিয়ারি

পরমাণু, রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্র প্রতিরোধ বিষয়ক রাশিয়ার বিশেষ সেনাবিভাগের প্রধান ইগোর ক্রাইলভ বলেছেন, মার্কিন সরকার জীবাণু অস্ত্র বিষয়ক সামরিক ক্ষমতার বিস্তৃতি ও জোরদার অব্যাহত রেখেছে।

বিশেষ করে ইউক্রেনে আমেরিকার জীবাণু বিষয়ক তৎপরতার কারণে ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠতম মিত্র দেশগুলোতেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ক্রাইলভ বলেছেন, মার্কিন সরকার দেশটির জীবাণু অস্ত্র বিষয়ক পরীক্ষাগারগুলোকে বিদেশের মাটিতে স্থানান্তর করছে। এসব কর্মসূচি বিপজ্জনক বলেই তা করছে। তিনি আরও বলেছেন, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন এক ভাইরাসের বিস্তার ঘটিয়েছে যা করোনার কোভিড-১৯ শীর্ষক রোগের নিয়ামক বা ঘটক। এই ভাইরাস ওমিক্রন ও করোনার মূল ভাইরাসের ভিত্তিতে গড়ে তোলা হয়েছে। 

মার্কিন জীবাণু অস্ত্রের কারণে বিশ্বের নিরাপত্তা যে হুমকির মুখে-রাশিয়ার এই হুঁশিয়ারিতে তা ফুটে উঠেছে।

মার্কিন সরকার জীবাণু অস্ত্র বিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষর করলেও বাস্তবে নানা ধরনের মানব-বিধ্বংসী বা নিষিদ্ধ অস্ত্র তৈরি ও বিস্তার অব্যাহত রেখে ওই কনভেনশন লঙ্ঘনে শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। রুশ জেনারেল ক্রাইলভ এ বিষয়ে বলেছেন, জাতীয় মার্কিন নিরাপত্তা বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা জন বোল্টনের তত্ত্বাবধানে মার্কিন জীবাণু অস্ত্র বিস্তারের পরিকল্পনা বিষয়ক একটি সনদ তৈরি করা হয়েছে। বোল্টন বিশ্বাস করতেন যে এ ধরনের অস্ত্র বিস্তারের মাধ্যমে মার্কিন সরকার একমাত্র প্রধান পরাশক্তি হিসেবে বিশ্বের ওপর নিজের কর্তৃত্ব খুব ভালোভাবে জোরদার করতে পারবে। 

মার্কিন সরকার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেসামরিক কর্মসূচির আড়ালে জীবাণু অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে যাতে এ নিয়ে উদ্বেগ ও সন্দেহ কমে যায়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর এই ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া রাষ্ট্রগুলোতে জীবাণু অস্ত্র বিষয়ক নানা গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেছে মার্কিন সরকার। বিশেষ করে ইউক্রেনসহ রাশিয়ার সঙ্গে লাগোয়া দেশগুলোতে এইসব মার্কিন গবেষণাগার সক্রিয়। এসব ল্যাবরেটরি রাশিয়ার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, কিয়েভের সরকার মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেনের ভূমিকে মার্কিন জীবাণু অস্ত্র বিষয়ক পরীক্ষার ময়দান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইউক্রেনে এখন অস্ত্র পাম্প করা হচ্ছে।

মার্কিন জীবাণু অস্ত্রের হুমকির বিষয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে যাতে এ বিষয়ে জবাবদিহির ব্যবস্থা করা হয়। রাশিয়া, চীন, বেলারাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, নিকারাগুয়া, সিরিয়া ও কিউবা ওই বৈঠক ডেকেছিল। এই দেশগুলো জীবাণু অস্ত্র নিষিদ্ধ করা বিষয়ক কনভেনশনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই কনভেনশন লঙ্ঘনকারী দেশের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অভিযোগ দায়েরের আইন বাস্তবায়নের দাবি জানান। কিন্তু মার্কিন সরকার এইসব প্রতিবাদকে উপেক্ষা করে বিশ্বের নানা অঞ্চলের পরীক্ষাগারগুলোতে তার জীবাণু অস্ত্র বিষয়ক সক্ষমতা বাড়ানোর তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। 
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news