আমেরিকা কেন তুরস্ক-সিরিয়া সম্পর্কের বিরোধিতা করছে?
সিরিয়ার সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছে আমেরিকা। তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেফ ফ্লেক এক বিবৃতিতে বলেছেন, তারা তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে যোগাযোগ ও সম্পর্কের বিরোধী।
মার্কিন নেতারা বহুবার আইএস বা দায়েশ প্রতিষ্ঠায় তাদের নিজেদের ভূমিকার কথা স্বীকার করলেও এখন বলছে, আইএস মোকাবেলায় তুরস্ক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আমেরিকা মুখে উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস-কে দমনের কথা বললেও তারা আসলে তুরস্ককে সঙ্গে নিয়ে আইএস-কে আবারও পুনর্গঠিত ও শক্তিশালী করতে চায়। কারণ আইএসের পরাজয়ের কারণে সিরিয়ায় আবারও শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু আমেরিকা তা চায় না। আমেরিকা চায় সিরিয়ার বর্তমান সরকার দুর্বল থাকুক এবং দখলদার ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষা পাক। প্রথম থেকেই সিরিয়া ইস্যুতে দখলদার ইসরাইল ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস একই লক্ষ্যে কাজ করেছে।
বাশার আসাদের পতন ঘটাতে উভয় পক্ষ পরস্পরকে সহযোগিতা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এখনও সিরিয়ায় মাঝে মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম প্রধান শত্রু ইসরাইল।
সিরিয়ার কয়েকটি অঞ্চল এখনও দখলে রেখেছে আমেরিকা এবং তারা সেখানে অবস্থান করে সিরিয়ার খনিজ সম্পদ ও খাদ্যশস্য চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে আইএসের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সক্রিয় রেখে সিরিয়ায় নিজের দখলদারিত্ব বজায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মার্কিন নেতারা। প্রতিবেশী তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক হলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সদা-সোচ্চার বাশার আসাদ সরকারের অবস্থান নিঃসন্দেহে আরও শক্তিশালী হবে।
সিরিয়ার বর্তমান সরকারের অবস্থান শক্তিশালী হওয়ার অর্থ হচ্ছে মার্কিন স্বার্থে বড় ধরণের আঘাত। এ কারণে আইএস প্রতিষ্ঠার মূল হোতা আমেরিকা তুরস্ককে সঙ্গে রাখতে আইএস দমনের অজুহাত দাঁড় করাচ্ছে যা সত্যিই হাস্যকর।
আমেরিকা যে আইএস দমন চায় না তার প্রমাণ পাওয়া গেছে আফগানিস্তানেও। আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস'র একের পর এক হামলার পেছনেও রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দখলদার ইসরাইলের পৃষ্ঠপোষকতা। আফগানিস্তান ত্যাগের আগে আইএস-কে নানাভাবে শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়েছে ওয়াশিংটন।
এ অবস্থায় তুরস্কের সরকার মার্কিন ফাঁদে পা না দিয়ে জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থে সিরিয়াসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের নীতি অব্যাহত রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খবর পার্সটুডে/ এনবিএস/২০২৩/একে


